স্টারলিংক কী? কীভাবে কাজ করে ও সাধারণ ইন্টারনেটের সাথে স্টারলিংকের পার্থক্য

 



স্টারলিংক (Starlink) হলো স্পেসএক্স (SpaceX) কোম্পানির একটি স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা, যা মূলত দূরবর্তী বা ইন্টারনেট-সংযোগহীন এলাকায় উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সরবরাহের জন্য তৈরি।





স্টারলিংক কীভাবে কাজ করে

এটি মূলত লো আর্থ অরবিট (LEO)-এ থাকা অসংখ্য ছোট স্যাটেলাইটের মাধ্যমে কাজ করে। ধাপে ধাপে প্রক্রিয়াটি এমন—

  1. স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক তৈরি

    • স্পেসএক্স হাজার হাজার ছোট স্যাটেলাইটকে পৃথিবীর ৫৫০ কিমি উচ্চতায় কক্ষপথে পাঠায়।

    • এই স্যাটেলাইটগুলো মিলে একটি নেটওয়ার্ক বা “constellation” গঠন করে।

  2. ইন্টারনেট সিগন্যাল প্রেরণ

    • ভূমিতে স্থাপিত “গ্রাউন্ড স্টেশন” থেকে স্যাটেলাইটে ইন্টারনেট সিগন্যাল পাঠানো হয়।

    • স্যাটেলাইটগুলো সেই সিগন্যাল অন্যান্য স্যাটেলাইটের সাথে লেজার লিঙ্কে শেয়ার করে।

  3. ব্যবহারকারীর ডিশ রিসিভার

    • ব্যবহারকারীর কাছে থাকে একটি বিশেষ ডিশ (Starlink Dish) এবং রাউটার।

    • এই ডিশ সরাসরি আকাশে থাকা নিকটতম স্টারলিংক স্যাটেলাইট থেকে সিগন্যাল গ্রহণ করে এবং ইন্টারনেট সরবরাহ করে।

  4. লো লেটেন্সি (Low Latency)

    • স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর খুব কাছাকাছি থাকায় (LEO) ডেটা আদানপ্রদানের সময় খুব কম লাগে (প্রায় ২০-৪০ মিলিসেকেন্ড)।

    • ফলে ভিডিও কল, অনলাইন গেমিং ইত্যাদি সহজে 

    • সম্ভব।


মূল বৈশিষ্ট্য

বৈশিষ্ট্য বিবরণ
গতি ৫০–২৫০ Mbps (পরিস্থিতি অনুযায়ী)
লেটেন্সি ২০–৪০ ms
কভারেজ দূরবর্তী পাহাড়ি, দ্বীপ, মরুভূমি, সমুদ্র এলাকা পর্যন্ত
ইনস্টলেশন একটি ডিশ ও রাউটার
ব্যবহার বাসা-বাড়ি, জাহাজ, বিমান, দূরবর্তী অফিস, দুর্যোগপীড়িত এলাকা


স্টারলিংক ও সাধারণ ইন্টারনেটের পার্থক্য: 

স্টারলিংক আর সাধারণ ইন্টারনেটের (যেমন ফাইবার, ব্রডব্যান্ড, DSL, মোবাইল নেটওয়ার্ক) মধ্যে মূল পার্থক্য হলো সংযোগের মাধ্যমভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা


স্টারলিংক বনাম সাধারণ ইন্টারনেট

বিষয় স্টারলিংক সাধারণ ইন্টারনেট
সংযোগ পদ্ধতি স্যাটেলাইট (লো আর্থ অরবিটে থাকা হাজারো ছোট স্যাটেলাইট) কেবল (ফাইবার অপটিক, কপার), টাওয়ার, বা মোবাইল নেটওয়ার্ক
ইনফ্রাস্ট্রাকচার নির্ভরতা গ্রাউন্ড স্টেশন ও আকাশে স্যাটেলাইট ভূগর্ভস্থ/ওভারহেড কেবল, টাওয়ার, নেটওয়ার্ক সুইচিং সিস্টেম
কভারেজ পৃথিবীর প্রায় সব জায়গা, এমনকি পাহাড়, দ্বীপ, সমুদ্রেও শহর ও উন্নত অবকাঠামো থাকা এলাকা
গতি ৫০–২৫০ Mbps (পরিস্থিতি অনুযায়ী) ফাইবার: ১০০ Mbps–১ Gbps+, DSL: ১–৫০ Mbps, মোবাইল: ১০–৩০০ Mbps
লেটেন্সি ২০–৪০ ms (LEO স্যাটেলাইটের কারণে কম) ফাইবার: ৫–২০ ms, DSL: ২০–৫০ ms, মোবাইল: ৩০–৭০ ms
ইনস্টলেশন খরচ ডিশ, রাউটার, সাবস্ক্রিপশন — তুলনামূলক বেশি কেবল সংযোগ বা রাউটার — তুলনামূলক কম
বিশেষ সুবিধা যেখানে কেবল বা টাওয়ার নেই, সেখানেও ইন্টারনেট পাওয়া যায় শহর ও অবকাঠামোযুক্ত এলাকায় দ্রুত ও স্থিতিশীল সংযোগ
চ্যালেঞ্জ খারাপ আবহাওয়ায় সিগন্যাল দুর্বল হতে পারে, দাম বেশি কেবল কেটে গেলে বা নেটওয়ার্ক ব্যর্থ হলে সংযোগ বন্ধ


Post a Comment

Previous Post Next Post